মোহাম্মদ শাহিদ মিয়াঃ বৃটেনের আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০১৫ ব্যাপক জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে। আর এ জল্পনা কল্পনার মূল উৎস হলো ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বৃটেন থাকা না থাকার প্রশ্ন নিয়ে। গত ২২ মে ইউরোপিয়ান নির্বাচনে বৃটেনে ইউ‘কে ইন্ডিপেনডেন্স পার্টির বিজয় ইউরোপিয়ান কমিউনিটিকে অবাক করে দিয়েছে। ইউ‘কে ইন্ডিপেনডেন্স পার্টি এখন বৃটেন সহ ইউরোপ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এছাড়া সম্প্রতি উপ-নির্বাচনে মিড্যলটন ও হেইউড আসনে ইউ‘কে ইন্ডিপেনডেন্স পার্টির বিজয় বৃটিশ রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সরকার দল কনসারভেটিব ও লিভারেল ডেমক্রেটস, বিরোদী দল লেবার এখন বেশ চিন্তার মুখে পড়েছেন।
আগামী নির্বাচন ২০১৫-তে ইউ‘কে ইন্ডিপেডেন্টন্স পার্টি বৃটেনের রাজনীতিতে বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে বলে বিজ্ঞ মহল ধারনা করছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সমনে রেখে বৃটেনের রাজনৈতিক মাঠ বেশ সরগরম রয়েছে। কনসারভেটিব ও লিবডেম ও লেবার দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা ইউ‘কে ইন্ডিপেনডেন্স পার্টির ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত প্রচারনা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। দেশের জনসাধারণ ইউ‘কে ইন্ডিপেন্ডন্স পার্টিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইমিগ্রেশন নীতির বিরোদীতার জন্য গত ইউরোপিয়ান নির্বাচনে ব্যাপকভাবে সমর্থন জানায়। যার প্রেক্ষিতে ইউ,কে,আই,পি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে বিজয় লাভ করে। বৃটেনের জনসাধারণ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে থাকার পক্ষে নয় বলে ইতিমধ্যেই ইউ‘কে,আই,পি প্রমান করতে সক্ষম হয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে এবারের জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমান হয়ে যাবে বৃটেনের জনসাধারন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে থাকার জন্য আগ্রহী কিনা।
আর তা প্রমানিত হবে যদি ইউ‘কে ইন্ডিপেনডেন্স পার্টি ব্যাপক ভোটে বৃটিশ পার্লামেন্টে স্থান করে নেয়। ইতিমধ্যেই ইউ‘কে আই‘পি এর লিডার নাইজ্যল ফ্যারাজ আগামী জাতীয় নির্বাচনে ব্যাপক সমর্থনে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা করছেন। এছাড়া লেবার পার্টির মাইনোরিটিদের সাথে জোট সরকার গঠনের ব্যাপারেও তিনি বিবিসি‘র এক সংবাদে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।তবে ২০১৫ সালের জাতীয় নির্বাচনে দেশের জনসাধারণ সে দলকে ভোট দিবে যারা দেশে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে। আর এ বিষয়ে ইউ,কে,আই,পি জনসাধারণের কাছে শীর্ষ আবস্থান রয়েছে বলে বিভিন্ন সমিক্ষায় জানা গেছে। এখন শুধু প্রতিক্ষার পালা বৃটেনের ভবিষ্যৎ রাজনীতির পটভুমি কি?
সরকারের ইমিগ্রেশন নীতি এশিয়ান ব্যবসা প্রতিষ্টান সমূহকে ধ্বংসের পথে টিলে দিচ্ছেঃ
সরকারের খামখেয়ালী ইমিগ্রেশন নীতির কারণে বৃটেনের এশিয়ান ব্যবসা প্রতিষ্টানগুলো বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানা গেছে। ইমিগ্রেশন আইন ঘনঘন পরিবর্তনের কারনে ইউরোপের বাহির থেকে এশিয়ান ব্যবসা প্রতিষ্টানের উপযোগী কর্মচারী আসা একেবারেই বন্ধে হয়ে যাওয়ার পথে। যার প্রেক্ষিতে কর্মচারী সংকটে ভোগছে ব্যবসা প্রতিষ্টানগুলো। বিশেষত, বৃটেনের বাংলাদেশীদের মালিকানাধিন সফল ব্যবসা ক্যাটারিং সেক্টর বিরাট সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রেস্টুরেন্ট বা টেইকওয়েগুলোতে কর্মী সংকট দিন দিন ব্যপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের মতে, প্রতি বছর নতুন লোক আসার কারণে কিচেনে লোক নিয়োগ নিয়ে তাদেরকে তেমন চিন্তা করতে হতো না। কিন্তু সরকারের নতুন ইমিগ্রেশন আইনের কারণে এখন বৃটেনের মা বাবারা তাদের ছেলে মেয়েদেরও বাংলাদেশে বিয়ে দেয়া থেকে বিরত রয়েছেন। আর ওয়ার্ক পার্মিট এখন তো স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়। তাই নতুন লোকের আগমন একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া অবৈধ ইমিগ্রেন্টদের ব্যপারে সরকারের কঠিন আইন ব্যবসায়ীদের মধ্যে আরো ভতি সৃষ্টি করেছে।
তাই অবৈধ লোকদের কাজে রাখতে সকলেই নারাজ। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে বৃটেনের ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট সেক্টর বিরাট হুমকির সম্মুখীন হবে বলে বিজ্ঞ মহল মনে করেন। লেবার ও কনসারভেটিব সরকারের কঠিন কঠিন ইমিগ্রেশন নীতি বৃটেনের ব্যবসা প্রতিষ্টানসমূহকে বয়াবহ সমস্যার পথে টেলে দিচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে যেসব লোক বৃটেনে কাজ করার জন্য আসছে তারা বস্তবিক পক্ষে কাজ না করে বৃটেনকে আর্থিক সংকটের পথে টেলে দিচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানা গেছে। বৃটেনে প্রায় ১৫ হাজারেরও অধিক বাংলাদেশী মালিকানাধিন রেস্টুরেন্ট রয়েছে। যেগুলোতে ইউরোপিয়ানরা কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে না। এছাড়া ইউরোপিয়ানরা ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট সেক্টরে কাজ করার জন্য একটুও দক্ষ নয়। তাই এ ইন্ডাস্ট্রিকে রক্ষা করতে সরকারকে ইমিগ্রেশন নীতির ব্যাপারে নমনীয় হতে হবে এবং ইউরোপের বাহির থেকে দক্ষ শ্রমিক আনার ব্যাপারে ইমিগ্রেশন নীতির পরিবর্তন আনতে হবে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেক্ষ চলতি মাসের গত ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ব্রিটেনের ইউরোপিয় ইউনিইয়নে থানা নিয়ে সংশয় আর তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় ইতালিয়ান পাসপোর্ট ধারী বাংলাদেশি সহ বহু ইউরোপিয়ান বাংলাদেশি। এ নিয়ে করা ব্রিটেন থেকে শাহ্নেওয়াজ রকির বিশেষ রিপোর্টের ভিডিওটি দেখে নিনঃ
যারা আপনাদের ফেসবুকে আমাদের সাইটের প্রতিটি লেখা পেতে চান তারা এখানে ক্লিক করে আমাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গিয়ে লাইক দিয়ে রাখতে পারেন।তাহলে আমিওপারিতে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা আপনার ফেসবুক নিউজ ফিডে পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ।
সম্পর্কিত আরো কিছু পোস্ট দেখতে পারেন...
সম্পর্কিত আরো কিছু পোস্ট দেখতে পারেন...
- চায়না ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ
- কানাডার ইমিগ্রেশন মানেই কি প্রতারণা, না কি বিষয়টি সত্যি? ২০১৮ তে।
- ইউরোপ থেকে ৯৩ হাজার অবৈধ দেশে পাঠানোর বিষয় টি সত্য না মিথ্যা? জেনে নিন বিস্তারিত।
- ইউরোপের পাসপোর্ট পেতে এখন থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ মিলবে অনলাইনে
- ২০১৭ তে কানাডায় ইমিগ্রেশন? বুঝে শুনে পা ফেলবেন। অহেতুক দৌড়াদৌড়ি নয়??
- ইউরোপের বা ইতালির পাসপোর্ট নেওয়ার সময় দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার সুবিধা অসুবিধা গুলো জেনে রাখুন?
- ইতালিয়ান কাগজ ধারীরা কিভাবে ইংল্যান্ডের ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদন করবেন? কি কি কাগজ পত্র লাগবে? জেনে নিন বিস্তারিত।